শনিবার, ১৮ জুলাই, ২০২০

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট কি বাংলাদেশের জন্য লাভজনক?

দেশের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ আজ মহাকাশে তার নিজের কক্ষপথ পরিভ্রমণ করছে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর আকাশে প্রায় ৬,৬০০ কৃত্রিম উপগ্রহ ছাড়া হয়েছে; তার ভেতর প্রায় ৩,৬০০ উপগ্রহ এখনও আকাশে আছে। একা রাশিয়াই উড়িয়েছে প্রায় ১৫০০ উপগ্রহ। তারপর আমেরিকা ১৩০০ টি, চীন ২১৩ টি, জাপান ১৫০ টি এবং ভারত ৬৩ টি। এই পৃথিবীর বেশিরভাগ উপগ্রহই গুটি কয়েটি দেশের হাতে। কিন্তু এরা সবাই কি জীবন্ত আছে? না, তা নেই। ৩১ আগস্ট ২০১৫ সালের এক তথ্যমতে, বর্তমানে জীবন্ত আছে মাত্র ১,৩০৫ টি কৃত্রিম উপগ্রহ (তথ্যসূত্র: Union of Concerned Scientists)। বাকিগুলো তাদের জীবন কাটিয়ে আকাশেই রয়ে গেছে। কেউ তাদেরকে ফিরিয়ে আনেনি পৃথিবীর মাটিতে। আকাশের আবর্জনার সাথে মিশে গেছে তাদের ভাসমান জীবন। এই উপগ্রহগুলো আকাশপথকে করে ফেলেছে ঝুকিপূর্ণ।

জীবন্ত প্রায় ১৩০০ উপগ্রহের ভেতর নতুন করে যুক্ত হয়েছে আমাদের একটি উপগ্রহ। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সারা বিশ্বে যখন পর্যান্ত স্যাটেলাইট রয়েছে, সেখানে আমাদের এই স্যাটেলাইটটি বিলাসিত কি না? এখানে কিছু তথ্য-উপাত্ত দেয়া যেতে পারে। বিটিআরসি`র তথ্যমতে, এই প্রজেক্টের জন্য তারা থ্যালাসকে ১৫ বছরে দেবে ২৪০ মিলিয়ন ডলার। তারপর এই উপগ্রহটিরও মৃত্যু হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বছরে ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে চলে যায় স্যাটেলাইট ভাড়া বাবদ। সেই হিসেবে ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যেতো ২১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। নিজেদের একটি উপগ্রহ পেতে আমাদের বাড়তি ব্যয় করতে হলো ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থ্যাৎ বছরে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাড়তি খরচ হবে।

তবে বিটিআরসি`র নতুন চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ সাহেব চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বেশ কিছু তথ্য দেন। তার মতে, এই উপগ্রহের ট্রান্সপন্ডার ভাড়া দিয়ে আয় হবে ১ বিলিয়ন ডলার; এবং ডিটিএইচ (ডিরেক্ট টু হোম) পদ্ধতির কাছে স্যাটেলাইট ভাড়া দিয়ে আরো আয় হবে ১.৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ডিটিএইচ লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। তারা শিঘ্রই ভারতের টাটা স্কাইয়ের মতো বাংলাদেশেও ডিস এন্টানার মাধ্যমে টিভি এবং ইন্টারনেট সেবা দিতে শুরু করবে।

তবে এটা ঠিক যে, সারা বিশ্বে স্যাটেলাইট ব্যবসা বেশ উত্থান-পতনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। স্যাটেলাইট অপারেটর ফাইনান্সিয়াল এনালাইসিসের মতে, সারা বিশ্বে ট্রান্সপন্ডার থেকে আয় কমতির দিকে। এবং স্যাটেলাইস ব্যবসায়ীরা বেশ চাপের মুখে রয়েছে। তবে পাশাপাশি নতুন নতুন চাহিদাও তৈরী হচ্ছে। যেমন উড়োজাহাজে এখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়ছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এই সেবা দেয়া হচ্ছে। এর সাথে যুক্ত হচ্ছে মেশিন-টু-মেশিন (এম-টু-এম) এবং ইন্টারনেট-অফ-থিংকস (আই-ও-টি)। এই দুই প্রযুক্তির মাধ্যমে শিপিং, কৃষি, সরকার, মিলিটারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক চাহিদার তৈরী হচ্ছে। পুরো বিশ্বেই এই বাজার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশ বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট মালিক দেশ হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তির এই কাটিং-এজ সেবা নিতে পারবে কি না, তা সবসময়ই প্রশ্ন সাপেক্ষ বিষয়। তবে দেশের নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে অন্যদের কাছে তা ভাড়া দিয়ে এটা হয়তো লোকসানের প্রকল্প হবে না, তা বলা যেতে পারে।

বাংলাদেশে বড় কোনও প্রজেক্ট হলেই তাকে ঘিরে নানান ধরনের কথা চলতে থাকে। তার মূল কথা হলো, এই প্রজেক্ট থেকে কে কত টাকা বানিয়েছেন। এটা একটা ব্রিজ তৈরী করলে যেমন হয়, রেলের বগি কিনলে হয়, সিএনজি স্কুটারের লাইসেন্সে যেমন হয়, ফ্লাই-ওভার, চার লেনের হাইওয়ে থেকে শুরু করে কম্পিউটারের কেনাকাটা পর্যন্ত বিস্তৃত।

বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের অনেক কিছুর সাথে আমরা একমত পোষন না করলেও, আমাদের নিজেদের একটি স্যাটেলাইট থাকুক, এটার সাথে বেশিরভাগ একমত। আমাদের পতাকা বহনকারী একটি উপগ্রহ আমাদের পৃথিবী নামক গ্রহটিকে দিন-রাত প্রদক্ষিন করবে – এই সুখটুকুর মূল্য আমার কাছে অনেক। এটা হয়তো টাকা দিয়ে কেনা যাবে না। তাই এই প্রজেক্ট করতে কত টাকা খরচ হয়েছে, আর কত টাকায় করা যেত – সেই হিসেবে আমরা যাচ্ছি না। আমাদের একটি উপগ্রহ হচ্ছে, আমরা সেই মোহে আবিষ্ট। ফ্যালকন-৯ রকেট ৩ দশমিক ৫ টন ওজনের বঙ্গবন্ধু-১ যোগাযোগ স্যাটেলাইটটি মহাকাশে নিয়ে গিয়েছিল। মহাকাশে নির্দিষ্ট স্লটে এটির পৌঁছাতে ৮ দিন সময় লেগেছিল।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ (BANGABONDHU-1) বাংলাদেশের প্রথম ভূস্থির যোগাযোগ উপগ্রহ। এটি ১১ মে ২০১৮ কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ৫৭ তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশের তালিকায় যোগ হয় বাংলাদেশ। এই প্রকল্পটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়িত হয় এবং এটি ফ্যালকন ৯ ব্লক ৫ রকেটের প্রথম পেলোড উৎক্ষেপণ ছিল। বঙ্গবন্ধু-১ কৃত্রিম উপগ্রহটি সম্পূর্ণ চালু হওয়ার পর বাংলাদেশের ভূ-কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এই জন্য গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় ভূকেন্দ্র তৈরি করা হয়। জয়দেবপুরের ভূ-কেন্দ্রটি হবে মূল স্টেশন। আর বেতবুনিয়ায় স্টেশনটি দ্বিতীয় মাধ্যম বা ব্যকঅাপ হিসেবে রাখা হয়। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে দুটি ভূ-উপগ্রহ উপকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট থেকে সাধারণত ৩ ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে। যেমন..

  • টিভি চ্যানেলগুলো তাদের সম্প্রচার কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য স্যাটেলাইট ভাড়া করে। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট চ্যানেলের সক্ষমতা বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। আবার দেশের টিভি চ্যানেলগুলো যদি এই স্যাটেলাইটের সক্ষমতা কেনে তবে দেশের টাকা দেশেই থাকবে। এর মাধ্যমে ডিটিএইচ বা ডিরেক্ট টু হোম ডিশ সার্ভিস চালু সম্ভব।
  • বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মোট ফ্রিকোয়েন্সি ক্ষমতা হলো ১ হাজার ৬০০ মেগাহার্টজ। এর ব্যান্ডউইডথ ও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে ইন্টারনেটবঞ্চিত অঞ্চল যেমন পার্বত্য ও হাওড় এলাকায় ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া সম্ভব। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট ও ব্যাংকিং সেবা, টেলিমেডিসিন ও দূরনিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থা প্রসারেও ব্যবহার করা যাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট।
  • বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে। তখন এর মাধ্যমে দুর্গত এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা চালু রাখা সম্ভব হবে।

কিছু তথ্য দেখেনিন একটু,

সূত্র: উইকিপিডিয়া

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশে খুলে দেয়া বিপুল সম্ভাবনার অংশীদার হয়ে উঠলো বাংলাদেশ। স্যাটেলাইটটি একাধারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং সম্প্রচার শিল্পের পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের মাধ্যমে দেশের দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট ও টেলিকমিউনিকেশন সুবিধার আওতায় আসবে।

মহাকাশের ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থান করে উপগ্রহটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায়-আবহাওয়া পূর্বাভাস ও পর্যবেক্ষণে দেশের সক্ষমতা সম্প্রসারিত করবে। বাংলাদেশে অপ্রত্যাশিত কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বর্তমান টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা যদি কখনও ভেঙ্গে পড়ে তখন গোটা দেশব্যাপী এই যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবিচ্ছিন্নভাবে সচল রাখা নিশ্চিত করতে স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, একটি যোগাযোগ স্যাটেলাইট থেকে তিন ধরনের সেবা পাওয়া যায়— ১. সম্প্রচার, ২. টেলিযোগাযোগ ও ৩. ডাটা কমিউনিকেশনস। তিনি বলেন, দর্শক ও শ্রোতাদের কাছে সরাসরি পৌঁছাতে টেলিভিশন এবং রেডিও স্টেশনগুলো ব্রডকাস্টিং সেবা ব্যবহার করে থাকে। ইন্টারনেট সেবা সরবরাহকারীরা আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) ইন্টারনেট সেবা দিতে স্যাটেলাইট ব্যবহার করেন। সেল ফোন এবং ল্যান্ড ফোন অপারেটররা তাদের সাবস্ক্রাইবারদের সঙ্গে সংযোগ তৈরির জন্য স্যাটেলাইটের টেলিযোগাযোগ সেবা ব্যবহার করতে পারেন।

বর্তমানে বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলগুলো তাদের সম্প্রচারের জন্য বিদেশি মালিকানাধীন স্যাটেলাইটের ওপরে নির্ভরশীল। বঙ্গবন্ধু-১ স্যালেটলাইট এই বিদেশ নির্ভরতা কমাবে এবং আমাদেরকে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয়ে সহায়তা করবে। এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃত্রিম উপগ্রহের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৩০টির বেশি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল সিঙ্গাপুর ও অন্যান্য দেশের স্যাটেলাইট ভাড়ায় ব্যবহার করছে। এতে বছরে ব্যয় হবে প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার। প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার এই স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২০টি ভাড়ার জন্য রাখা হয়েছে।ফলে উপগ্রহটি থেকে সার্ক দেশগুলোর পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, তাজাকিস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কিস্তান ও কাজাকিস্তানে ভাড়া দেয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে। কর্মকর্তারা জানান,নবগঠিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) ইতোমধ্যেই ট্রান্সপন্ডার ভাড়ার জন্য ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জানান, এর মাধ্যমে শুধু বৈদেশিক মুদ্রারই সাশ্রয় হবে না, সেই সঙ্গে অব্যবহৃত অংশ নেপাল, ভুটানের মতো দেশে ভাড়া দিয়ে প্রতি বছর আয় হবে প্রায় ৫ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকারও বেশি। সে হিসেবে ৭ বছরে খরচ উঠে আসবে। ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের অপর একটি পণ্য উল্লেখ করে বিটিআরসি বলেছে, ৪০টি ট্রান্সপন্ডারে মোট এক হাজার ৬০০ এমএইচজেড ফ্রিকুয়েন্সি রয়েছে। তবে বাংলাদেশি স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলোর এক শঙ্কা ছিল, বঙ্গবন্ধু-১ এর অবস্থান হয়তো তাদের সম্প্রচারে কিছু সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ জানান, এখন তারা অন্য স্যাটেলাইটের সহযোগিতায় সহজেই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। বর্তমানে বাংলাদেশের সকল বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল তাদের সম্প্রচারের জন্য এ্যাস্টার-৭ ব্যবহার করছে, যা ৭৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি পূর্বে। শুধু রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) তাদের সম্প্রচার এশিয়াস্যাট-৭ থেকে সম্প্রচার কার্যক্রম চালায়, যা ১০৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি পূর্বে। ক্যাবল টেলিভিশন সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিকল্প হিসেবে ডাইরেক্ট-টু-হোম (ডিটিএইচ) তখন স্যাটেলাইটের অন্যতম প্রধান গ্রাহক হবে। ডিটিএইচ সেবা বিশ্বব্যাপী টেলিভিশন বিনোদনের জগতে দ্রুত গতির সেবা দিয়ে থাকে এবং এখন বঙ্গবন্ধু-১ এর মাধ্যমে এই সেবা আরও সহজ ও দ্রুততর করবে। স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে ভিডিও তথা সম্প্রচার সহজ করার পাশাপাশি অনুষ্ঠান কার্যক্রম ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক এবং ডিটিএইচের মাধ্যমে অনায়াসে বিতরণ করতে পারবে। এ ছাড়া ভিডিও সার্ভিস, ই-লার্নিং, টেলি-মেডিসিন, পরিবার পরিকল্পনা, কৃষি খাতসহ দুর্যোগ উদ্ধারে ভয়েস সার্ভিসের জন্য সেলুলার নেটয়ার্কের কার্যক্রম এবং এসসিএডিএ, এওএইচও এর ডাটা সার্ভিসের পাশাপাশি বিজনেস-টু-বিজনেস (ভিস্যাট) পরিচালনায় আরও সহজতর করবে। স্যাটেলাইটে নিজস্ব ভিস্যাট থাকবে যার মাধ্যমে ব্যাংক ও অন্যান্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভয়েস, ডাটা ও ইন্টারনেট সেবা নিতে পারবে। বিটিআরসি ২০১৫ সালের নভেম্বরে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট নির্মাণের জন্য ফ্রান্সের থালেস অ্যালিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য স্পেস এক্স এর ফেলকন-৯ লঞ্চার ব্যবহার করা হবে। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য বাংলাদেশ ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারস্পুটনিক’ এর কাছ থেকে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলারে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় (স্লট) কক্ষপথ স্লট কিনে।


আরও পড়ুন :

রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০

ভিপিএন/VPN

ভিপিএন ফুল মিনিং হচ্ছে, 'ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক' যখন একটি পাবলিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একাধিক কম্পিউটারকে (বা আলাদা নেটওয়ার্ক) একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়, তখন তাদের ভিপিএন বলে। নিরাপদ যোগাযোগ এবং ডাটা অ্যানক্রিপ্ট করার একটি পদ্ধতি হিসেবে এটি কাজে লাগে। মানে ভিপিএন আপনার মেশিনকে একটি ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে এবং আপনার পাঠানো সব ডাটা দ্রুততার সঙ্গে এনক্রিপ্ট করে ফেলে অর্থাৎ পাবলিক ডোমেইন থেকে লুকিয়ে রাখে এবং এটা আপনার ব্রাউজিং হিস্টোরির কোনো ট্র্যাক রাখে না। কাজেই আপনি অনলাইনে পুরোপুরি নিরাপদ। যদিও বেশির ভাগ ভিপিএন সার্ভিসের জন্য টাকা গুনতে হয়। তবে কিছু ফ্রি সার্ভিসও আছে। ফ্রি ভিপিএন সার্ভিসের কিছু উপকারিতা রয়েছে।

সুবিধা: সম্পূর্ণ ফ্রি সার্ভিস। এর জন্য আপনাকে কোনো সার্ভিস চার্জ গুনতে হবে না। অ্যাডবিহীন সার্ভিস অর্থাৎ কোনো ধরনের বিরক্তিকর অ্যাড নেই। ব্লক হওয়া সাইটে নিরাপদে ভিসিট করতে পারবেন। হ্যাকারদের হাত থেকে মুক্তি। এর মাধ্যমে অনলাইনে আপনার আইপি লুকায়িত থাকবে। ফলে হ্যাকারদের কবলে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আপনার ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী আইপিএস থেকে নেটের ফুল স্পিড পাবেন। তবে কিছু অসুবিধাও আছে। যেমন ধরুন, এটি সম্পূর্ণভাবে ইন্টানেটের ওপর নির্ভরশীল। এটি আপনাকে টরেন্ট ফাইল ডাউনলোডের সুবিধা দেবে না। চলুন কিছু ফ্রি ভিপিএন সার্ভিস সম্পর্কে জানা যাক।

ProXPN সার্ভিস: অতি জনপ্রিয় সার্ভিস। এটি আপনি উইন্ডোজ এবং ম্যাকে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ব্যবহারের জন্য আপনাকে ছোট একটি অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে হবে এবং এটি দ্বারাই ভিপিএন কানেক্ট করতে হবে।

Cybershost সার্ভিস: কেবল উইন্ডোজ পিসিতে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি আপনাকে মাসে ১ জিবিএন ক্রিপ্টেড ডাটা ট্রান্সফারের সুবিধা দেবে। সার্ভিসটি ব্যবহার করার জন্য আপনাকে একটি ফ্রি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনি পছন্দ মতো সার্ভার বাছাই করতে পারবেন না। ওয়েব সার্ফিংয়ের ক্ষেত্রে এটি ভালো একটি সার্ভিস।

Hotspot Shield সার্ভিস: এটি উইন্ডোজ ম্যাক এবং আইফোনে ব্যবহার উপযোগী। বলতে পারেন এটি একটি সেলফ সাপোর্ট সার্ভিস। এটি অ্যাড ফ্রি নয়। অ্যাডের মাধ্যমে ওরা ফান্ড সংগ্রহ করে।

SecurityKiss সার্ভিস: এটি আপনাকে প্রতিদিন ৩০০ মেগাবাইট ব্যান্ডউইথ দেবে। এ সার্ভিসটি অ্যাঙ্সে করার জন্য আপনাকে securitykiss সফটওয়্যার দরকার হবে এবং এটি কেবল উইন্ডোজে ব্যবহারযোগ্য। যদি সিকিউরিটির ব্যাপারে খুঁতখুঁতে হন তাহলে আপনার জন্য পেউড ভিপিএন ব্যবহার করার পরামর্শ থাকবে।


সহজভাবে বোঝার জন্য প্রথমে ভিপিএন কি সেটাকে একটু সাইডে রাখি। আর নজর দেই আমাদের ইন্টারনেট কানেকশন কিভাবে কাজ করে তার উপরে!

যখন আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য ঐ সাইটটির লিঙ্ক ব্রাউজারে প্রবেশ করান, প্রথমে ডোমেইন নেম থেকে আইপি অ্যাড্রেস খুঁজে বেড় করা হয়। আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারের একটি ডিএনএস (ডোমেইন নেম সার্ভার) সার্ভার রয়েছে, যেখানে সকল ডোমেইন নেমের একটি ডাটাবেজ থাকে। অবশ্যই শুধু কোন নেম ব্যবহার করে কোন ওয়েব সার্ভার কানেক্ট করা সম্ভব নয়, অবশ্যই আইপি অ্যাড্রেস খুঁজে পেতে হবে তবেই ওয়েব সার্ভারের সাথে কানেক্ট হওয়া সম্ভব।

তো আপনার প্রথম রিকোয়েস্ট’টি ডিএনএস সার্ভারের কাছে যায় আইপি অ্যাড্রেস খুঁজে পাওয়ার জন্য। তারপরে আইপি অ্যাড্রেস পেয়ে গেলে আপনার রিকোয়েস্ট আপনার আইএসপির আইপি এবং ফায়ারওয়াল অতিক্রম করে তবেই ইন্টারনেট সার্ভারের কাছে গিয়ে পৌছায়। এখন যদি আপনার আইএসপি কোন সাইটের নেম বা আইপি অ্যাড্রেস ব্লক করে রাখে, সেক্ষেত্রে আপনার রিকোয়েস্ট ঐ ওয়েব সার্ভারের কাছে পৌঁছানর পূর্বেই আইএসপির ফায়ারওয়াল আপনার রিকোয়েস্টকে ফিল্টার করে ব্লক করে দেবে। এখন শুধু কিন্তু আইএসপিই সাইট ব্লক করে রাখে না, অনেক সময় ঐ ওয়েবসাইট’টিও আপনার লোকেশনকে ব্লক করে রাখে। যেমন আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে নেটফ্লিক্স ভিজিট করেন ,সেক্ষেত্রে আপনাকে কখনোই পরিষেবা প্রদান করা হবে না, কেনোনা নেটফ্লিক্স সার্ভার আপনার জিও লোকেশন ব্লক করে রেখেছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভিপিএন কিভাবে যেকোনো সাইট আন-ব্লক করতে পারে? — পূর্বে কি হতো, আপনার কম্পিউটার থেকে ডাইরেক্ট রিকোয়েস্ট গিয়ে আইএসপি কম্পিউটার হয়ে তারপরে ওয়েব সার্ভারে পৌঁছাত। কিন্তু ভিপিএন ব্যবহার করলে, আপনার কম্পিউটার প্রথমে আইএসপির সাথে কানেক্ট হবে কিন্তু এরপরে ভিপিএন সার্ভারের কাছে সকল রিকোয়েস্ট যাবে, ভিপিএন সার্ভার হয়ে তারপরে সেটা ওয়েবসাইট সার্ভারের কাছে রিকোয়েস্ট পৌঁছাবে।

আগে কি হতো, যে আইপি গুলো আইএসপি থেকে ব্লক ছিল সেগুলতে অ্যাক্সেস করা যেতো না, কিন্তু ভিপিএন ব্যবহার করার পরে যেকোনো আইপি অ্যাক্সেস করা যায়, কেনোনা ঐ আইপিতে রিকোয়েস্ট সরাসরি আইএসপির মাধ্যমে করায় হয় না! আপনার আইএসপি শুধু মাত্র ভিপিএন আইপির সাথে কানেক্টেড থাকবে, কিন্তু এক প্রাইভেট সুরঙ্গ দিয়ে আপনি আর ভিপিএন সার্ভারের মধ্যে কোন ফাইল বা কোন সাইট অ্যাক্সেস করবেন সেটা আইএসপি বুঝতেই পারবেনা। কেনোনা সকল ডাটা গুলো এনক্রিপশন করে ট্র্যান্সমিট করা হয়, ফলে আপনার আইএসপি শুধু দেখতে পাবে আপনি ভিপিএন এর সাথে কানেক্টেড রয়েছেন, কিন্তু এর ভেতর দিয়ে আপনি কি করছেন সেটা পড়া সম্ভব নয়।

আবার ওয়েব সার্ভারের কাছেও ভিপিএন আইপি থেকে রিকোয়েস্ট যায়, ভিপিএন সার্ভার পৃথিবীর যেকোনো দেশে অবস্থিত থাকতে পারে, আপনি যদি ইউএসএ সার্ভার ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেকোনো ব্লক থাকা সাইট আন-ব্লক হয়ে যাবে। ওয়েব সার্ভার নিজেও আপনার সঠিক জিও লোকেশন পাবে না।

চলুন আরো ব্যাস্তব উদাহরণ দেওয়ার মাধ্যমে ভিপিএন টার্মটিকে খোলাসা করার চেষ্টা করি। মনে করুণ, আপনার বাসা থেকে আপনাকে বাজারে যাওয়া নিষেধ (যেমন আইএসপি যেকোনো সাইট ব্লক করে রাখে), তো অবশ্যই বাসা থেকে বেরনোর আগে আপনার অবিভাবক আপনাকে দেখে ফেলবে এবং আপনাকে আটকিয়ে দেবে।

কিন্তু আপনার ভাইয়ের বাসা থেকে বাজারে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে, তো আপনি যদি ভাইকে বাজার থেকে কিছু জিনিষ আনতে বলেন সে সহজেই বাজারে গিয়ে আপনাকে এনে দেবে। যদি সে কৌশলে সিক্রেট প্যাকেটে (যেমন ভিপিএন এনক্রিপশন ব্যবহার করে ডাটা ট্র্যান্সমিট করে) আপনাকে জিনিষটি এনে দেয়, তাহলে আপনার অবিভাবকও বুঝতে পারবে না, আপনাকে কি এনে দিলো!

আবার মনে করুণ, আপনার বাসা থেকে তো বেড় হওয়া যাবে, কিন্তু মার্কেটের নির্দিষ্ট দোকানদার আপনাকে দোকানে যেতে নিষেধ করেছে (যেমন- যেকোনো ওয়েবসাইট আপনার লোকেশন বা আইপি ব্লক করে রেখেছে) , কিন্তু আপনার ঐ দোকান থেকেই জিনিষ দরকার, তাহলে কি করবেন? এখানেও আপনার ভাইকে পাঠিয়ে দিতে পারেন, অবশ্যই আপনার ভাইকে দোকানদার কিছু বলবে না, এবং আপনি ঐ জিনিষটি পেয়ে যাবেন। তো এখানে ভিপিএন ঠিক আপনার ভাইয়ের মতোই কাজ করে।

ভিপিএন নিয়ে আশা করছি এবার একটি বেসিক আইডিয়া হয়ে গেছে সহজেই, রাইট? এখন যদি প্রশ্ন করে কেন ভিপিএন ইউজ করবেন, ওয়েল অলরেডি উত্তর উপরের প্যারাগ্রাফ গুলোতে রয়েছেই, আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে আমার লেখা কিছু পোস্ট সাজেস্ট করবো, নিচের লিংক গুলো অনুসরণ করুন;

আপনি যখন কোণ ভিপিএন বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটয়ার্কে যুক্তহোন তখন আপনার কম্পিউটারের সাথে বাহিরের পৃথিবীর সকল ইন্টারনেট কানেকশন বিচ্ছিন্ন হয়, শুধুমাত্র ভিপিএন এর সাথে আপনার ডিভাইসটি যুক্তথাকে। আপনি যখনই কোন সাইটে ঢুকার চেষ্টা করেন, তখন ভিপিএন প্রোভাইডারা আপনার পক্ষ থেকে তাদের নিজের আলাদা আইপি দিয়ে সেই সাইটে ঢুকে, আর ডাটাগুলো আপনার ব্রাউজারে পাঠায়। যেহেতু আপনি সরাসরি রিকুয়েস্ট পাঠাচ্ছেন না, তাই আপনি ব্লক করা সাইটও দেখতে পারবেন ভিপিএন দিয়ে।

আরেকটা উদাহরণ দেই, মনে করেন, আপনি একজন এমপিকে একটা চিঠি দিতে চান, কিন্তু এমপির কাছে যাওয়া আপনার জন্য নিষেধ, তখন আপনি একজন পিয়নকে দিয়ে চিঠিটা পাঠালেন, যেহেতু পিয়ন এমপির কাছে যেতে বাধা নেই, আর পিয়নও এমপি কি উত্তর দিলেন, সেটা আপনাকে জানালো। তাহলে আপনার আর এমপির মাঝে পিয়ন যেভাবে কাজ করল, ভিপিএনও ঠিক সেই কাজ করে, আপনার ও ব্লকড সাইটের মাঝে।

ফ্রি ভিপিএন এর মধ্যে Windscribe VPN সব থেকে বেশি ডাটা ফ্রি দেয় আর স্পিড ও বেশ ভালো মনে হইছে। এছাড়া আর আছে, ফ্রি ভিপিএন লিখে সার্চ দিলেই পাবেন, নিজে কয়েকটা ট্রাই করলে বুঝতে পারবেন কোনটা আপনার জন্য ভালো।



VPN এর লাভ ও সুবিধে:

একটি ভিপিএন কেন ব্যবহার করবেন বা ভিপিএন ব্যবহার করে আপনার কি কি লাভ হবে, সেটা নিচে আমি আপনাদের এক এক করে বলে দিচ্ছি।

  • যখন আমরা একটি VPN service এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তখন আপনার সকল পার্সোনাল ডাটা (personal data) সুরক্ষিত রাখা হয়। এর ফলে, বিভিন্ন data বা information, হ্যাকার দেড় চোখ থেকে দূরে থাকে।
  • VPN ব্যবহার কোরে, আমরা আমাদের অনলাইন পরিচয় লুকিয়ে রাখতে পারি। মানে, আপনি কোন জায়গা বা দেশ থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, সেটা লুকানো সম্ভব। কিন্তু, যেই কোম্পানির ভিপিএন সার্ভিস ব্যবহার করছেন, তারা কিন্তু আপনার আসল IP address ও লোকেশন অবশই জানবেন।
  • VPN ব্যবহার করে আমরা যেকোনো blocked website বা app নিজের মোবাইল ও কম্পিউটারে ব্যবহার করতে পারি। বেশিরভাগ লোকেরা, একটি ফ্রি ভিপিএন ব্যবহার কোরে বিভিন্ন blocked websites গুলিতে প্রবেশ করেন।
  • আপনারা নিজের network এর IP address অনেক সহজেই বদলে, অন্য একটি country র IP address এ রূপান্তর করতে পারবেন।
  • কিছু কিছু প্রিমিয়াম ভিপিএন (premium vpn) আপনার ইন্টারনেটের স্পিড বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু, আবার কিছু ফ্রি ভিপিএন আপনার ইন্টারনেট স্পিড কমিয়েও দিতে পারে।

তাহলে, যদি বলা হয়, “vpn এর লাভ কি কি“, তাহলে এগুলি কিছু সেরা লাভ রয়েছে ভিপিএন এর। তবে, আপনি যদি কিছু খারাপ উদ্দেশ্যে vpn ব্যবহার করার কথা ভাবছেন, তবে এই ভুল কখনোই করবেননা।

কারণ, police বা আইনের অধিকারীরা vpn company থেকে আপনার আসল IP address অনেক সহজেই বেড় করে নিতে পারবেন।

তাই, কেবল নিজের ইন্টারনেট কানেক্শনকে হ্যাকার (hacker) এবং ডাটা ও প্রাইভেসী চোর দেড় থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য vpn অবশই ব্যবহার করুন।

VPN এর ব্যবহার:

যদি আপনি আপনার ঘরে যেকোনো secure এবং private নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, তাহলে vpn এর কোনো প্রয়োজন নেই। মানে, যদি আপনি একটি password protected wifi hotspot থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, তাহলে, সেটা secure এবং তখন ভিপিএন এর কোনো প্রয়োজন নেই। তাছাড়া, যদি আপনারা কোনো open এবং public wifi hotspot ব্যবহার করছেন যেমন, railway station, কোনো hotel এ বা flight বা train এ, তখন সেই open নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে যেকোনো hacker আপনার network বা system হ্যাক করতেই পারে। তাই, মনে রাখবেন যে যেকোনো public এবং open নেটওয়ার্ক যেটা অচেনা অনেক ব্যক্তি একসাথেই ব্যবহার করছেন, সেই নেটওয়ার্ক কখনোই সুরক্ষিত না এবং তখন আপনার একটি VPN ব্যবহার করা উচিত। এমনিতে, পারলে সবসময় একটি vpn ব্যবহার করে ইন্টারনেটে কানেক্ট হওয়াটা নিরাপদ (safe)। তাহলে, Vpn কেন এবং কখন ব্যবহার করবেন, সেটা হয়তো আপনারা বুঝে গেছেন।


ডিজিটাল কনভারজেন্স


মানুষের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই তথ্য প্রযুক্তির হাওয়া লেগেছে। এমন কোন ক্ষেত্র পাওয়া যাবে না যেখানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। মানুষের জীবনে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রাপ্তি সহজতর করার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তথ্য প্রযুক্তির বিবর্তনের পাশাপাশি যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এক সময় রেডিও, টেলিভিশন, টেলিগ্রাফ, টেলিপ্রিন্টার, ফ্যাক্স, টেলিটেক্সট, টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি চালু হয়েছে। মানুষের তথ্যের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। মানুষ এখন যখন যেখানে প্রয়োজন তখন সেখানে সঠিক তথ্য পেতে চায়। যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া শুধুমাত্র তথ্য প্রযুক্তি মানুষের এই চাহিদার যোগান দিতে পারবে না। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি উভয়ের উন্নয়নের ফলে মানুষের এই চাহিদা পূরণ হচ্ছে। সার্বিকভাবে প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের ফলে তথ্য প্রযুক্তির সাথে যোগাযোগ প্রযুক্তির একীভূতকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়। কারণ, এই দুই প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। একটি আরেকটির পরিপূরক, তবে প্রতিযোগিতা নয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি বর্তমান সময়ে একটি জনপ্রিয় বিষয়। তবে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি এতই জনপ্রিয় হয়েছে যে, অনেকের কাছেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিও তথ্য প্রযুক্তি নামে পরিচিত। কাজেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনেকটা সমার্থক হিসাবে সর্বত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা ২০১৫ অনুসারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে, " যে কোন প্রকারের তথ্যের উৎপত্তি, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চালন এবং বিচ্ছুরণে ব্যবহৃত সকল ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি" কে বোঝায়। ইউনেস্কো ব্যাংকক থেকে প্রকাশিত ICT in Education Programme শীর্ষক বইয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে নীচের বাক্যগুলো উল্লেখ করা হয়েছে: "THE TERM ICT REFERS TO FORMS OF TECHNOLOGY THAT ARE USED TO TRANSMIT, PROCESS, STORE, CREATE, DISPLAY, SHARE OR EXCHANGE INFORMATION BY ELECTRONIC MEANS." 


একটু প্রাক্টিক্যালি বোঝা যাক ধরুন,আপনার কাছে একটা স্মার্টফোন আছে। স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে আপনি ইচ্ছে হলেই ফোনালাপ, মিউজিক, ভিডিও, ছবিতোলা, হিসাবনিকাশ ইত্যাদি আরো নানা কাজ করতে পারছেন শুধুমাত্র একটি ডিভাইস ব্যবহার করে। অপরদিকে যদি আপনার কাছে একটি মিউসিক প্লেয়ার থাকতো তাহলে আপনি এতগুলো ডিভাইস এর কাজ প্লেয়ার টি ব্যবহার করে করতে পারতেন না। আবার ধরুন আপনার কাছে একটি টেলিভিশন আছে। তাহলে সেটি ব্যবহার করে আপনি শুধু ভিডিও এবং মিউসিক এর জন্য ব্যবহার করছেন। কিন্তু ছবিতোলা, হিসাবনিকাশ, ফোনালাপ করতে পারছেন না। কিন্তু এই ক্ষেত্রেও ডিজিটাল কনভারজেন্স হচ্ছে। কারণ দুটি ডিজিটাল ডিভাইস তো একত্রীকরণ করতে পারছি। ডিজিটাল কনভারজেন্স কোনোদিন শেষ হবে না এটি সময়ের সাথে সাথে আমাদের সময় এবং খরচ বাঁচাতে এবং প্রয়োজনের তাগিদে এটি আরো ক্রমবর্ধমান ভাবে বিস্তৃত হবে।

শনিবার, ১১ জুলাই, ২০২০

স্বাগতম


বর্তমান যুগ আলোর গতিতে বদলাচ্ছে। এই বদলের পিছনে সবচেয়ে বড় হাত যেরকম প্রযুক্তির আবার সেই একই সাথে সবচেয়ে বড় অন্তরায়ও প্রযুক্তিই। সার্চ ইঞ্জিনের ডেটাবেজ যত আপডেট থাকবে আমাদের বদলে যাওয়ার গতিও ততই বাড়তে থাকবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির একটা মজার ব্যাপার হলো এটি দিন দিন আমাদের অনুকরণ প্রিয় একটি জাতিতে পরিণত করে দিচ্ছে। এটা ভালো জিনিস। প্রযুক্তি এগিয়ে চলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বেড়াজালের মধ্যে দিয়ে। আপনি জানেন, আমেরিকান গণিতবিদ, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও ক্রিপ্টোগ্রাফার ক্লাউডি এলউড শ্যানন কে ইনফরমেশন তত্ত্বের জনক বলা হয়। ১৯৪৮ সালে তাঁর প্রকাশিত A Mathematical Theory of Communication শীর্ষক গবেষণা নিবন্ধে তিনি ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের গোড়াপত্তন করেন। এজন্য তাঁকে ইনফরমেশন এজ ( Information Age ) বা তথ্য যুগের জনকও বলা হয়। 



কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভাষায়, কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে কম্পিউটারে ডাটা প্রক্রিয়াকরণের ফলে প্রাপ্ত ফলাফলকে ইনফরমেশন বা তথ্য বলে। তবে সকল ইনফরমেশন মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন সহজ, অর্থবহ, সঠিক, সম্পূর্ণ, নির্ভরযোগ্য, বিষয়-সংশ্লিষ্ট, নিরাপদ এবং সময়োপযোগী হওয়া উচিত। ডেটা হচ্ছে একটি ইনফরমেশনের ক্ষুদ্রতম অংশ।

এইখানেই যত সমস্যা। এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগে কোন তথ্য আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটা না সেইটাই আলাদা না করতে পেরে; অনেকেই কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে নিয়ে অনুকরণে নেমে আসে আর তখন এই প্রযুক্তিই জাতির অন্তরায় হিসেবে বিবেচিত হয়। আমাদের এই ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য হলো মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা আর গুরুত্বপূর্ণহীন তথ্যকে আমরা ছেড়ে দিচ্ছি না। সেই সব তথ্যকে কিভাবে কাজে লাগিয়ে তাকেও ব্যবহার করা যায় সেটিও থাকছে। সাথে থাকবেন।