রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০

ডিজিটাল কনভারজেন্স


মানুষের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই তথ্য প্রযুক্তির হাওয়া লেগেছে। এমন কোন ক্ষেত্র পাওয়া যাবে না যেখানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। মানুষের জীবনে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রাপ্তি সহজতর করার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তথ্য প্রযুক্তির বিবর্তনের পাশাপাশি যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এক সময় রেডিও, টেলিভিশন, টেলিগ্রাফ, টেলিপ্রিন্টার, ফ্যাক্স, টেলিটেক্সট, টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি চালু হয়েছে। মানুষের তথ্যের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। মানুষ এখন যখন যেখানে প্রয়োজন তখন সেখানে সঠিক তথ্য পেতে চায়। যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া শুধুমাত্র তথ্য প্রযুক্তি মানুষের এই চাহিদার যোগান দিতে পারবে না। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি উভয়ের উন্নয়নের ফলে মানুষের এই চাহিদা পূরণ হচ্ছে। সার্বিকভাবে প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের ফলে তথ্য প্রযুক্তির সাথে যোগাযোগ প্রযুক্তির একীভূতকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়। কারণ, এই দুই প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। একটি আরেকটির পরিপূরক, তবে প্রতিযোগিতা নয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি বর্তমান সময়ে একটি জনপ্রিয় বিষয়। তবে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি এতই জনপ্রিয় হয়েছে যে, অনেকের কাছেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিও তথ্য প্রযুক্তি নামে পরিচিত। কাজেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনেকটা সমার্থক হিসাবে সর্বত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা ২০১৫ অনুসারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে, " যে কোন প্রকারের তথ্যের উৎপত্তি, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চালন এবং বিচ্ছুরণে ব্যবহৃত সকল ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তি" কে বোঝায়। ইউনেস্কো ব্যাংকক থেকে প্রকাশিত ICT in Education Programme শীর্ষক বইয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে নীচের বাক্যগুলো উল্লেখ করা হয়েছে: "THE TERM ICT REFERS TO FORMS OF TECHNOLOGY THAT ARE USED TO TRANSMIT, PROCESS, STORE, CREATE, DISPLAY, SHARE OR EXCHANGE INFORMATION BY ELECTRONIC MEANS." 


একটু প্রাক্টিক্যালি বোঝা যাক ধরুন,আপনার কাছে একটা স্মার্টফোন আছে। স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে আপনি ইচ্ছে হলেই ফোনালাপ, মিউজিক, ভিডিও, ছবিতোলা, হিসাবনিকাশ ইত্যাদি আরো নানা কাজ করতে পারছেন শুধুমাত্র একটি ডিভাইস ব্যবহার করে। অপরদিকে যদি আপনার কাছে একটি মিউসিক প্লেয়ার থাকতো তাহলে আপনি এতগুলো ডিভাইস এর কাজ প্লেয়ার টি ব্যবহার করে করতে পারতেন না। আবার ধরুন আপনার কাছে একটি টেলিভিশন আছে। তাহলে সেটি ব্যবহার করে আপনি শুধু ভিডিও এবং মিউসিক এর জন্য ব্যবহার করছেন। কিন্তু ছবিতোলা, হিসাবনিকাশ, ফোনালাপ করতে পারছেন না। কিন্তু এই ক্ষেত্রেও ডিজিটাল কনভারজেন্স হচ্ছে। কারণ দুটি ডিজিটাল ডিভাইস তো একত্রীকরণ করতে পারছি। ডিজিটাল কনভারজেন্স কোনোদিন শেষ হবে না এটি সময়ের সাথে সাথে আমাদের সময় এবং খরচ বাঁচাতে এবং প্রয়োজনের তাগিদে এটি আরো ক্রমবর্ধমান ভাবে বিস্তৃত হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন